কুবি প্রতিনিধি: ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হয়েছে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা। গুচ্ছ পদ্ধতির এই ভর্তি পরীক্ষায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অধীনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯ টি কেন্দ্রে এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার ছিল ৯৪.৭%। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের আহ্বায়ক ড. মো. সাইফুর রহমান।
ড. মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘এ’ ইউনিটে আমাদের মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৯ হাজার ১১ জন, এর মধ্যে উপস্থিত ছিল ৮ হাজার ৫৩৫ জন। অর্থাৎ ৯৪.৭% উপস্থিত ছিল। এছাড়া মোট অনুপস্থিত পরীক্ষার্থী ছিল ৪৭৬ জন।
শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২ টায় পরীক্ষা শুরু হয়ে দুপুর ১ টায় শেষ হয়। পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা হল থেকে বেরিয়ে হলের পরিবেশের ব্যাপারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তবে প্রশ্ন সিলেবাসের বাইরে থেকে হয়েছে কেউ এমন মন্তব্যও করেন। আব্দুল্লাহ ফয়সাল নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষার পরিবেশ ঠিক ছিল। কোন সমস্যা হয় নি। তবে পরীক্ষা শর্ট সিলেবাসে হওয়ার কথা থাকলেও ফুল সিলেবাসে হয়েছে। ফলে অনেক প্রশ্নই পারিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে কড়া নজর রেখেছি। যাতে কোনোভাবেই নিয়মের ব্যত্যয় না ঘটে। এছড়াও রাস্তায় ট্রাফিক, গাড়ি ভাড়া, হোটেলের মূল্য সব যেন ঠিক থাকে এসবেও আমরা আগেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
এদিকে, সকল কেন্দ্রেই মোবাইল নিয়ে কেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কোটবাড়ি সংলগ্ন টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) কেন্দ্রে ও কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড সরকারি মডেল কলেজ কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন নিয়েই কেন্দ্রে প্রবেশ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
এ বিষয়ে টিটিসি কেন্দ্রের দায়িত্বরত বিএনসিসির এক সদস্য বলেন, আমরা শুরুর দিকে ফোন নিয়ে ভেতরে ঢুকতে দেইনি। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর সময় হয়ে গেলে এখানে দায়িত্বরত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসে আমাদের বলেছেন এখানে যেহেতু বেশি জটের সৃষ্টি হচ্ছে তাহলে তারা আপাতত ফোন নিয়েই ভেতরে যাক।
টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) কেন্দ্রের কেন্দ্র সমন্বয়ক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, আমরা সবাইকে বলেছি যাতে ফোন না নিয়ে প্রবেশ করে। কিন্তু তারপরেও যদি কেউ নিয়ে আসে সেক্ষেত্রে তো আমাদের কিছু করার নাই। তবুও আমরা পরীক্ষা শুরুর আগে আবারো শিক্ষার্থীদের সামনে ফোন রেখে পরীক্ষায় বসতে বলেছি।
এ বিষয়ে ‘এ’ ইউনিটের আহ্বায়ক ড. মো. সাইফুর রহমান বলেন, সকল শিক্ষককে বলে দেয়া হয়েছে যাতে মোবাইল পেলে সামনে টেবিলে জমা নিয়ে রাখে। আর মোবাইল নিয়ে কেউ পরীক্ষা দিয়েছে বলে অভিযোগ এখনো পাইনি।।
পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন বিভিন্ন হল ও কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখেন। পরীক্ষা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, আজকে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি হলে ঘুরে দেখেছি। দুয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বাইরের কেন্দ্রগুলোতেও পরীক্ষার ভালো পরিবেশ ছিল। আমাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি আন্তরিক ছিল বলেই সব সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সামনের পরীক্ষাগুলোতেও আমরা এমন সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করবো।
তিনি আরো বলেন, আর যাদের অন্য কেন্দ্রে সিট পড়েছে কিন্তু ভুলক্রমে এই কেন্দ্রে চলে আসছে তাদেরও আমরা পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিয়েছি। আমরা দায়িত্বরত শিক্ষকদের বলে দিয়েছি যাতে তাদের আইডেন্টিফাই করে আলাদা করে বসার সুযোগ দেয়।
উল্লেখ্য, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সহযোগিতার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল।